সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৪ অপরাহ্ন
এম আই ফারুক আহমেদ, কালের খবর : দেশের মোট বনভূমির পরিমান প্রায় ২৬ লাখ হেক্টর। এর মধ্যে এ যাবদ ২ লাখ ৬৮ হাজার একর সরকারী বনভূমি বেদখলে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী ( ভোলা-৩) এর এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। মন্ত্রী জানান, দেশের মোট আয়তনের শতকরা ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার কথা। কিন্তু আমাদের ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বনভূমি রয়েছে।
তিনি জানান, বহুদিন আগে থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরকারী বনাঞ্চলের নিকটবর্তী জনসাধারণ চাষাবাদ, বসতি স্থাপণ, রাস্তাঘাট নির্মাণ ইত্যাদি কারণে জবরদখল হয়ে আছে। কোন কোন স্থান পাকা ইমারত, শিল্পায়ন, পাকা সড়ক নির্মাণ, হাট বাজার স্থাপণ ইত্যাদি কারণে বনভ’মি বেদখল হয়ে আছে। তবে বর্তমানে ব্যাপক প্রচার এবং সরকারের তৎপরতার ফলে নতুন করে বনভূমি জবরদখলের কোন সুযোগ নেই। তবে জবরদখলকৃত জমি দখলমুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিভাগীয় বনকর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। কাজ চলমান।
মহিলা আসন-২৪ এর এমপি বেগম সানজিদা খানমের এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানান, আগামী ৫ বছরে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী দেশের বনভূমি ২৪ শতাংশে উন্নীত করার কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুৃন জেগে ওঠা চর বনায়ন, দেশের সমগ্র উপকুল জুড়ে বনায়নের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী নির্মাণ, সড়ক ও বাঁধের পার্শে ও রেল লাইনের ধারে বনায়ন সৃজন করা, সরকারী বেসরকারী ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান সমূহের আঙিনায় বনায়ন এবং সকল স্তরের জনগণকে নিজস্ব পতিত জমিতে বনায়নের জন্য উৎসাহিত করার কাজ চলমান।
৫ কোটি ৯০ লাখ ১৩ হাজারটি চারা রোপন।মহিলা আসন-৩৯ এর এমপি হাজেরা খাতুনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বন অধিদপ্তরের অধীনে মোট ২৫ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। বর্তমানে ১৯ টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এর মাধ্যমে ১৮ হাজার ৬ শত ৯৭৮ হেক্টর ব্লক বাগান, ২ হাজার ৭১৭ কি. মি. স্ট্রিপ বাগান, বিক্রয় ও বিতরণসহ অন্যান্য চারা রোপন করা হয়েছে ৫ কোটি ৯০ লাখ ১৩ হাজারটি।
মন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রান্ট ফান্ড ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট রাজস্ব বাজেট হতে ৩ হাজার ২ শত কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মেকাবিলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টিবোর্ড কতৃক ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের মে মাস পর্যন্ত ২ হাজার ৮ শত ৮৯ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার কোটি প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৫৬২ টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫৯ টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নের প্রকল্প গ্রহনের বিষয়টি প্রকল্পের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপর নির্ভর করে। তবে বর্তমানে এ ফান্ডে বরাদ্দযোগ্য অর্থের স্থিতি নেই।
জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল পরিচালনার জন্য আইনী বিধান অনুযায়ী ১৭ সদস্যের উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে এবং ট্রাস্টি বোর্ডকে সহায়তার জন্য ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি সহায়তা কমিটি তৈরি করা হয়েছে।
তিনি জানান, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও ঝুকি নিরুপনের জন্য ‘ এসেসমেন্ট অব সি লেবেল রাইজ এন্ড ভার্নাবিলিটি ইন দি কোস্টাল জোন অব বাংলাদেশ থ্রু টেন্ড এনালাইসিস’ শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প নিয়েছে যা চলমান রয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অনেক গুলো প্রকল্প ও সহায়তাও কার্যকরী রয়েছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক কালের খবর নিয়মিত পড়ুন ।